উখিয়া নিউজ ডটকম::
বছরের প্রতি মৌসুমে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধ্বসে হতাহতের ঘটনা ঘটছে। বর্ষা এলেই উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগ সহ সংশ্লিষ্টদের নানামুখী তৎপরতা চোখে পড়লেও বছরের বাকী সময়গুলোতে এ নিয়ে আর কোন কথা হয়না। যে কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে অপমৃত্যু বিদ্যমান রয়েছে। ২০১১ সালে এ উপজেলার ভালুকিয়া ও আমতলী এলাকায় পাহাড় ধ্বসে ১২ জনের করুন মৃত্যু হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই ঝুকিপূর্ণ বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আবারো পাহাড় ধ্বসের মতো ভয়াবহ অঘটন ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের জরিপমতে এ উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ী এলাকায় প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ অনিশ্চিত বসবাস করছে। বিশেষ করে জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাটুয়ার টেক থেকে মনখালী পর্যন্ত সাগর ঘেষা ইনানীর পাহাড়ে রাজাপালং ইউনিয়নের দোছরী, হরিণমারা, পালংখালী ইউনিয়নের থিমছড়ি, রতœাপালং ইউনিয়নের রেজু আমতলী সংলগ্ন গর্জনবনিয়া আছারতলী সহ প্রভৃতি পাহাড়ী এলাকায় এখন ঝুঁকিপূর্ণ জনবসতি এলাকায় পরিণত হলেও দেখার বা বলার কেউ নেই। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সর্দার শরিফুল ইসলাম জানান, অর্থবিত্ত ও ভূমিহীন বেশির ভাগ ছিন্নমুল পরিবার সরকারি বনভূমির সুউচ্চ পাহাড়ে ঝুকি নিয়ে বসবাস করছে। দুর্যোগ মুহুর্তে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন অভিনব প্রচারণা চালিয়ে সর্বসাধারণকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার কথা বললেও কে শুনে কার কথা। যে কারণে অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধ্বসের ঘটনায় অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। তিনি বলেন, এসব পরিবারাগুলোকে স্থায়ীভাবে সরিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত এ পরিস্থিতির কোন উন্নতি হবে না। উপরুন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি এলাকা ঘুরে স্থানীয় বসবাসকারীদের সাথে আলাপ করা হলে তারা জানান, গত ২ বছরের প্রবল বর্ষণে বিশাল পাহাড়ী এলাকা ধ্বসে পড়েছে। সেখানে কোন জনবসতি না থাকায় ভাগ্যক্রমে হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তারা মনে করছেন, অদূর ভবিষ্যতে এখানে পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু এসব এলাকায় সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু চক্র পাহাড় কেটে মাটি পাচার অব্যাহত রেখেছে। পুলিশ মাঝে মধ্যে হানা দিয়ে মাটি ভর্তি ট্রাক আটক করলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় এসব মাটি পাচারকারী চক্র অনায়াসে পাড় পেয়ে পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছে।
পাহাড় কাটার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে ইনানী বনরেঞ্জ কর্মকর্তা মির আহামদ জানান, লোকবল সংকটের কারণে পাহাড় কাটা প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। তথাপিও ইতিমধ্যে পাহাড় কেটে মাটি পাচারের অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি বলেন, ঝুকিপূর্ণ বসবাসকারীদের অন্যত্রে সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
পাঠকের মতামত